গোধূলির সুর ~নাসরীন হামিদ~ ০৮/০৪/২০২৫
প্রকাশঃ ০৮:৫১ মিঃ, মে ৩১, ২০২৫
গোধূলির সুর
~নাসরীন হামিদ~
০৮/০৪/২০২৫
গোধূলির সুর
~নাসরীন হামিদ~
০৮/০৪/২০২৫
সোনালি রোদের শেষ বিকেল—
সূর্য ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছে মাঠের পেছনে,
আলোর কোমল ছোঁয়ায় গাছের পাতায় ঝুলে থাকে দিনশেষের কাব্য,
মেঠো পথের ধারে ছায়ারা হেলে পড়ে
যেন ক্লান্ত কোনো যাযাবরের নিঃশব্দ আরাম।
তৃষ্ণার্ত আলো এসে ছুঁয়ে যায় শ্যামল ঘাস,
যেন কোনো একান্ত প্রেমিকা
তার প্রিয় মুখের শেষ ছায়া ধরে রাখতে চায় নির্লিপ্ত ভালোবাসায়।
আকাশ জুড়ে তখন রঙের এক অলিখিত চিঠি—
কমলার উষ্ণতা, বেগুনির রহস্য আর লালের আবেগে লেখা
সন্ধ্যার প্রতীক্ষা।
পাখিরা ফিরে আসে নীড়ে,
ডানায় বয়ে আনে নিঃশব্দ আরতির মতো এক গোধূলি-প্রার্থনা।
দিগন্তের রেখায় মিলিয়ে যায় শেষ আলো—
যেন কেউ ধীরে ধীরে নেমে যায় মনের মঞ্চ থেকে,
একটি অনুচ্চারিত বিদায়ের মতো,
এক গভীর নিঃশ্বাসের ভালোবাসা হয়ে।
প্রকৃতি তখন নীরব ধ্যানে ডুবে যায়।
পাতারা যেন থেমে যায় নিঃশব্দ নির্দেশে,
পাখিরাও আর কোনো প্রশ্ন তোলে না আকাশে।
গাছের ডালে রয়ে যায় এক ফালি শেষ আলো,
যা একটু পরেই বিলীন হয়ে যাবে
নীল অন্ধকারের সমুদ্রে।
বাতাস বয়ে আনে দীর্ঘশ্বাসের সুর,
ঝিরিঝিরি হাওয়া ঘাসের গায়ে আঁকে দোলা,
মাটিতে ছড়িয়ে থাকে শুকনো পাতা—
যেন বিস্মৃত কোনো চিঠির ছেঁড়া পৃষ্ঠা,
ভেঙে পড়া কোনো স্মৃতির নিঃশব্দ রেখা।
আমি হাঁটি সেই সোনালি ছায়ার ভিতর দিয়ে—
পায়ের নিচে পাতারা মচমচ করে ওঠে
কাকের ডানার মতো শব্দে।
চারদিকে নিস্তব্ধতা, তবু মনে হয়—
প্রকৃতি কিছু একটা বলছে,
এক নিঃশব্দ উচ্চারণে,
এক বিষণ্ন প্রেমের মতো প্রগাঢ় ও চিরন্তন।
গোধূলি যখন নামে, আমি নিঃসঙ্গ হয়ে যাই।
প্রকৃতিও তখন আর কারো নয়—
শুধু নিজের।
আর সেই একাকিত্বের গহন নির্জনতায় জন্ম নেয় এক অপার্থিব বন্ধন—
আমি আর প্রকৃতি,
একই সুরে বাঁধা, একই ঋতুতে গাঁথা,
শেষ বিকেলের শেষ আলোয়
ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাই অনন্ত ছায়ায়।
Views : 65
সম্পর্কিত পোস্ট
ব্লগ

একাকীত্বে আমি সৃষ্টিকর্তার ছায়া দেখি — নাসরিন হামিদ
একাকীত্বে আমি সৃষ্টিকর্তার ছায়া দেখি
— নাসরিন হামিদ
২১/০৫/২৫
মানুষ একাকী হলে, সে কাঁদে না— সে জেগে ওঠে।
যখন চারপাশে কেউ থাকে না,
তখনই সে দেখতে পায়—
অদৃশ্য এক আলো,
যা শুধু সৃষ্টিকর্তার কাছ থেকে আসে।
আমি একা যখন, আমি সবচেয়ে শক্তিশালী।
কারণ তখনই আমি শুনতে পাই তাঁর ডাক,
যিনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন ভাঙার জন্য নয়,
জেগে ওঠার জন্য।
মানুষ ভীড়ের মধ্যে নয়,
নির্জনতায় তার সবচেয়ে পবিত্র রূপে পৌঁছে যায়।
কা