বর্তমান সময়ে সবচেয়ে আলোচিত একটি স্মার্টফোন

প্রকাশঃ ১০:৫৮ মিঃ, মে ১০, ২০১৮ Card image cap

মধ্যম বাজেটের স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে (অ্যাসুস) বেশ বড় ধরণের একটি চমক আনতে যাচ্ছে| আলোচনাটি বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। অবশেষে সব ধরনের আলোচনার অবসান ঘটিয়ে ৩,মে তারিখে ভারতের বাজারে অবমুক্ত হয় অ্যাসুস জেনফোন ম্যাক্স প্রো (এম১)।

প্রযুক্তি বাংলা কনটেন্ট কাউন্সিলর:

মধ্যম বাজেটের স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে (অ্যাসুস) বেশ বড় ধরণের একটি চমক আনতে যাচ্ছে| আলোচনাটি বেশ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। অবশেষে সব ধরনের আলোচনার অবসান ঘটিয়ে ৩,মে তারিখে ভারতের বাজারে অবমুক্ত হয় অ্যাসুস জেনফোন ম্যাক্স প্রো (এম১)।

বাংলাদেশ এবং ভারতের স্মার্টফোন বাজারের মধ্যে যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে।বর্তমান সময়ে  এই দুইদেশের মধ্য বেশ কয়েকটি  শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী স্মার্টফোন বাজারে রয়েছে। এদের মূল্যও বেশ কাছাকাছি।তবে যে বিষয়টি (জেনফোন মাক্স প্রোকে) অন্য সব প্রতিদ্বন্দ্বী স্মার্টফোন থেকে বাজারে এগিয়ে রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে তা হলো এই স্মার্টফোনটির মূল্য।নতুন এই স্মার্টফোনটির ৩ গিগাবাইট র‌্যাম এবং ৩২ গিগাবাইট অভ্যন্তরীণ ধারণ ক্ষমতার সংস্করণটির মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে মাত্র ১০,৯৯৯ রুপি, যা বর্তমান বাজার পরিপ্রেক্ষিতে বেশ চমকে দেবার মতো একটি স্মার্টফোন। ফ্লিপকার্ট এক্সক্লুসিভ এই ফোনটি নিয়ে বাংলাদেশের মোবাইলপ্রেমীদের আগ্রহ এবং আলোচনা বর্তমানে খুব বেশি।

 

আকার- আয়তন

জেনফোন ম্যাক্স প্রো এম১ স্মার্টফোনটির সামনের দিকটি গ্লাস এবং কাঠামোটি অ্যালুমিনিয়াম দিয়ে তৈরি। ৬.২৬ x ২.৯৯ x ০.৩৩ ইঞ্চি।স্মার্টফোনটি এলটিই (VoLTE) সমর্থিত।

ব্যাটারি: ৫,০০০ মিলিআম্পায়ার ব্যাটারি। বড় ব্যাটারি দ্রুত চার্জ করার জন্য স্মার্টফোনটিতে রয়েছে বেশ ‘দ্রুত চার্জ’ দেবার সুবিধা। ম্যাক্স প্রো স্মার্টফোনটি ৫ ভোল্ট/ ২ এম্পিয়ার এবং ১০ ওয়াট দ্রুত চার্জ সুবিধা সম্পন্ন।

ওজন: এই ফোনটির ওজন ১৮০ গ্রামের মতো।

 পর্দা: জেনফোন ম্যাক্স প্রোতে ৫.৯৯ ইঞ্চির ফুলভিউ পর্দা ব্যবহার করা হয়েছে।পর্দাটি পুরোপুরিভাবে মাল্টিটাচ সমর্থিত। আইপিএস এলসিডি (IPS LCD) পর্দাটির রেজ্যুলেশন (১০৮০ x ২১৬০ পিক্সেল)। পর্দার সাথে পুরো ফোনটির আয়তনের অনুপাত ৭৭ শতাংশ (93.1 cm2)। ১৮: ৯ অনুপাতের এই ফোনের পর্দার ঘনত্ব ৪০২ পিপিআই। অ্যাসুসের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, ফোনটির পর্দা ১৫০০:১ কনট্রাস্ট অনুপাত এবং ৪৫০ নিট মানের ঔজ্জ্বল্য প্রদান করবে।

 

প্রসেসর এবং জিপিইউ

ম্যাক্স প্রো ফোনটিতে বিশ্ববিখ্যাত মোবাইল প্রসেসর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান কোয়ালকমের একদমই নতুন প্রসেসর সিরিজ ৬৩৬ (Qualcomm SDM636 Snapdragon 636) ব্যবহার করা হয়েছে। অক্টাকোরের এই প্রসেসর ১.৮ গিগাহার্জ (Kryo 260) ক্ষমতাসম্পন্ন। গ্রাফিক্সের বিষয়টি দেখাশোনার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে আড্রিনো ৫০৯ (Adreno 509), যা বেশ ভালোমানের গেমিং পারফরম্যান্সের জন্য সুপরিচিত।

 

বিভিন্ন মডেল এবং দাম

অ্যাসুস জেনফোন ম্যাক্স প্রো তিনটি সংস্করণে বাজারে আসছে। ৬৪ গিগাবাইট অভ্যন্তরীণ ধারণ ক্ষমতায় ৪ গিগাবাইট এবং ৬ গিগাবাইট র‌্যামে দুটি সংস্করণ এবং একটি অপেক্ষাকৃত প্রান্তিক মডেল ৩২ গিগাবাইট অভ্যন্তরীণ সুবিধা এবং ৩ গিগাবাইট র‍্যামের সংস্করণ। ভারতের বাজারে এই সংস্করণগুলোর মূল্য হতে যাচ্ছে যথাক্রমে ১০,৯৯৯, ১২,৯৯৯ এবং ১৪,৯৯৯ রুপি।

ক্যামেরা

রিয়ার ক্যামেরা

জেনফোন ম্যাক্স প্রো স্মার্টফোনটিতে সংস্করণভেদে ক্যামেরার ভিন্নতা রয়েছে। ফোনটির ৩/৪ গিগাবাইট র‌্যামের সংস্করণে রিয়ার ক্যামেরা হিসেবে ১৩ মেগাপিক্সেলের বিএসআই (complementary metal-oxide semiconductor) সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে। ‘ডেপথ অব ফিল্ডের’ জন্য রয়েছে আরেকটি ৫ মেগাপিক্সেলের সেন্সর। এই সেন্সরটি ২.৪ অ্যাপাচার বিশিষ্ট এবং এটিতেও ১.১২ মাইক্রনপিক্সেল ব্যবহার করা হয়েছে। প্রধান এবং ‘ডেপথ সেন্সিং’ দুটি ক্যামেরায়ই আলট্রাপিক্সেল ব্যবহার করার কারণে দিনের বেলায় ‘ঝকঝকে এবং আকর্ষণীয়’ ছবির পাশাপাশি রাতের কম আলোতেও স্মার্টফোনটি থেকে বেশ ভালো মানের ছবি পাওয়া যাবে বলে অ্যাসুস থেকে বলা হচ্ছে।ম্যানুয়াল টাচ ফোকাস, জিও টাগিং, বিশেষ এইচডিএর (HDR) সুবিধা, ফ্লাশ লাইট, প্যানোরমা ছবির সুবিধাসহ যাবতীয় সব বৈশিষ্ট্যই থাকছে ফোনটিতে।

সেলফি ক্যামেরা

স্মার্টফোনটির সেলফি ক্যামেরাটিতে সাধারণভাবে ৮ মেগাপিক্সেলের একটি সেন্সর থাকছে। এই সেন্সরটি ২.২ অ্যাপাচার বিশিষ্ট এবং আলট্রাপিক্সেল (১.০ মাইক্রনপিক্সেল) সমৃদ্ধ। সেলফি ক্যামেরার বিশেষ বৈশিষ্ট্য হিসেবে ‘ফেস রিকগনিশন সুবিধা’ দেয়া হয়েছে।

এছাড়া ৬ গিগাবাইট র‍্যামের মডেলটিতে প্রধান রিয়ার ক্যামেরা হিসেবে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেন্সর ব্যবহার করা হছে। এক্ষেত্রে সেলফি ক্যামেরায়ও বেশ বড় ধরনের পরিবর্তন রয়েছে। ৬ গিগাবাইট মডেলে ১৬ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা ব্যবহৃত হয়েছে।

বিশেষ ক্যামেরা বৈশিষ্ট্য

ম্যাক্স প্রো ফোনটির ক্যামেরা যে বিশেষ বৈশিষ্টের কারণে এই বাজেটের প্রতিদ্বন্দ্বী ফোনগুলোর থেকে এগিয়ে আছে তা হলো এই স্মার্টফোনটির ৪কে ভিডিও ধারণ ক্ষমতা। ৪কে’র পাশাপাশি ফোনটি দিয়ে ১০৮০পিক্সেল ভিডিও ধারণও সম্ভব। স্টক এন্ড্রয়েড ব্যবহৃত হলেও ফোনটির ক্যামেরা অ্যাপ ‘গুগল ক্যামেরা’ নয়। বরং এখানে অ্যাসুসের অপটিমাইজেশনে ‘কোয়ালকম ক্যামেরা’ ব্যবহার করা হয়েছে। এই কাজটি করা হয়েছে মূলত ফোনটিকে র’মোডে (RAW) ছবি এবং ৪কে ভিডিও ধারণের সুবিধা দেবার জন্য। এখানে উল্লেখ্য, ৪কে সুবিধা থাকলেও ফোনটি থেকে ‘ডিজিটাল ইমেজ স্টাবিলাইজেশন’ সুবিধা পেতে হলে অ্যাসুস থেকে ১০৮০পি’তে ভিডিও ধারণ করার পরামর্শ দেয়া হয়।

অডিও

স্মার্টফোনটিতে ৩.৫ মিলিমিটার হেডফোন জ্যাক সুবিধা রাখা হয়েছে। সুন্দর এবং পরিচ্ছন্ন অডিও প্রদানের জন্য 192 kHz/ 24- bit অডিও এবং স্মার্ট পিএ (Smart PA) থাকছে এই ফোনটিতে।

এন্ড্রয়েড আপডেট

অ্যাসুস তার গতানুগতিক নিজস্ব এন্ড্রয়েড স্কিন থেকে বেরিয়ে এসে ম্যাক্স প্রো স্মার্টফোনটিতে গুগলের ‘ষ্টক অ্যান্ড্রয়েড’ ব্যবহার করেছে।প্রাথমিকভাবে ফোনটিতে এন্ড্রয়েড ওরিও’র (Android Oreo) হালনাগাদ সংস্করণ ৮.১ ব্যবহার করা হয়েছে। অ্যান্ড্রয়েড ওয়ান ডিভাইস হিসেবে ফোনটিতে আপডেটের যাবতীয় সুবিধা প্রদান করবে গুগল। কাজেই ফোনটিতে ঝামেলাবিহীন দ্রুত আপডেট পাওয়া যাবে। এছাড়া অ্যাসুস থেকে ভবিষ্যতে দ্রুততম সময়ে অ্যান্ড্রয়েড কিউ (Android Q) পর্যন্ত আপডেটের কথা বলা হয়েছে। কাজেই, স্মার্টফোনটি আগামী প্রায় দু’বছর পর্যন্ত দ্রুত অফিসিয়াল আপডেট পেতে যাচ্ছে।

বিভিন্ন সেন্সর

অ্যাসুসের নতুন এই জেনফোনটিতে বেশ কয়েকটি সেন্সর রয়েছে। সিকিউরিটি হিসেবে ফোনটির রিয়ার মাউন্টে রয়েছে একটি ‘ফিঙ্গারপ্রিন্ট’ সেন্সর।ফোনটিতে অ্যাক্সিললেরোমিটার, প্রক্সিমিটি এবং কম্পাস সেন্সর ব্যবহার করা হয়েছে।

ম্যাজিক বক্স

স্মার্টফোনটির সাথে রয়েছে একটি বিশেষ ‘ম্যাজিক বক্স’। এই বক্সটি মূলত একটি স্ট্যান্ডবিশেষ, যার কাজই হচ্ছে এতে ফোন থাকা অবস্থায় সাউন্ডের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি না করা। কাজেই, এই বক্সটিতে ফোনটি থাকা অবস্থায় বাধাহীন সুন্দর সাউন্ডের ভিডিও বা অডিও উপভোগ করা যাবে।

 

বাড়তি ধারণ ক্ষমতা

স্মার্টফোনটিতে একইসাথে দুটি সিম কার্ড চালু রাখার পাশাপাশি বাড়তি ধারণ ক্ষমতার জন্য বিশেষ ‘মেমরি কার্ড স্লট’ রাখা হয়েছে। এই স্লটে ৪০০ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়তি মেমরি কার্ড ব্যবহার করা যাবে।

অন্যান্য বৈশিষ্ট্যঃ মাইক্রো ইউএসবি ২.০,ওটিজি (USB On-The-Go), বিভিন্ন ধরনের জিপিএস সুবিধা, যেমন A-GPS, GLONASS, BDS থাকছে এই স্মার্টফোনে। ডিপসি ব্লাক এবং টাইটানিয়াম গ্রে রঙে ভারতের বাজারে ১৬০ ইউরোতে (১০৯৯৯ রুপি) সর্বপ্রথম উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে প্রান্তিক মডেলের অ্যাসুস জেনফোন ম্যাক্স প্রো (M1)।

 


Views : 1524